বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান স্বল্পতার কারণে মোড়ে মোড়ে যাত্রীদের অপেক্ষমান দেখা গেছে৷ দীর্ঘসময় অপেক্ষার পরও যান না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন অনেকে৷
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল কম দেখা গেছে৷ স্বল্প দূরত্বের কিছু বাস চলাচল করলেও পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরকিশাগুলোকেও থামিয়ে উল্টো পথে ফেরত পাঠাতে দেখা গেছে৷ বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে যাত্রীরা বিকল্প খুঁজেছেন৷ মহাসড়কে ঢাকামুখী বিভিন্ন ছোট যানবাহন পুলিশ আটকে দিলেও দু-একটি যাত্রাবাহী ছোট আকারের বাস চলাচলের জন্য ছেড়ে দিতে দেখা গেছে৷ তবে সেসব বাসে বেশি দূরত্বের যাত্রী তুলছেন না চালক।
হিমালয় ট্রান্সপোর্ট নামে যাত্রী পরিবহনের একটি বাস মদনপুর থেকে ঢাকার মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করে৷ তবে আজ বাসটিতে কেবল চিটাগাং রোড পর্যন্ত যাত্রী তুলছেন৷ বাসটি কাঁচপুর থামলে অপেক্ষমান যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন৷ তবে যাত্রীবোঝাই থাকার কারণে পাঁচ-ছয়জনের বেশি যাত্রীর জায়গা হয় না বাসে৷ কয়েকজনকে বাসের গেট ধরে ঝুলে চলতেও দেখা যায়৷
এ বাসের স্টাফ শফিক বলেন, ‘সামনে বাস থামিয়ে দেয় পুলিশ৷ এ কারণে ঢাকার দিকে যাইতে পারি না। চিটাগাং রোড পর্যন্ত চালাইতেছি৷’ এদিকে মহাসড়কে বসানো পুলিশের
তল্লাশিচৌকিগুলো যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যাত্রী পরিবহন করা অন্তত পাঁচটি প্রাইভেট কার কাঁচপুর এলাকায় থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে দেখা গেছে৷
ফুপাতো বোনের নবজাতক সন্তানকে রক্ত দেওয়ার জন্য চাঁদপুরের কচুয়া থেকে সকাল সাতটায় রওয়ানা হন মো. শামীম নামে এক তরুণ৷ দূরপাল্লার বাস না পেয়ে প্রথমে সিএনজিতে টাকায় গৌরিপুরের আমিরাবাদ বাসস্ট্যান্ড, পরে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে ৩০০ টাকায় কাঁচপুর আসেন। কাঁচপুরে তাকে নামিয়ে দেয় পুলিশ৷
শামীম বলেন,
২০০ টাকায় ঢাকার সায়েদাবাদ চইলা যাওয়া যাইতো৷ বাস না পেয়ে আসায় কাঁচপুর পর্যন্তই ৪০০ টাকা খরচ৷ এখান সাইনবোর্ড যেতে আরও ১০০ টাকা খরচ যাইবো৷
সোনারগাঁ থানার কাঁচপুর সেতুর পূর্বপাশের চালে এক পুরুষ সহকর্মীর সাথে দুই নারী পোশাককর্মীকে যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে যায়। মদনপুর থেকে থাকতে দেখা যায়৷ ব্যাটারিচালিত রিকশায় কাঁচপুর পর্যন্ত আসার পর পুলিশ তাদের গাড়ি থামিয়ে নামিয়ে দেয়৷ তারা যাবেন সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরীবাড়ি৷ কাঁচপুর সেতুর ঢালে দাঁড়িয়ে বিকল্প বাহনের অপেক্ষা করছেন তারা৷
সুরাইয়া ইয়াসমিন নামে পোশাক কর্মী বলেন, মদনপুর থেকে সরাসরি চৌধুরাবাড়ি বাস যায়। আজকে সব বন্ধ৷ অটোরিকশায় এই পর্যন্ত আসছি, তারপর নামিয়ে দিয়েছে৷ গাড়ি বন্ধ রাখলে কী হবে, অফিস তো খোলা৷ মাঝখান দিয়া ভোগান্তি আমাদের।’
সড়কের বিপরীত পাশে অন্তত অর্ধশত নারী ও পুরুষ শ্রমিককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়৷ কথা বলে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের দুই নম্বর ঢাকেশ্বরী এলাকার জয় অটো পার্মেন্টস লিমিটেড নামে কারখানার কর্মী তারা৷ প্রতিদিন কারখানার স্টাফ বাসে তারা যাতায়াত করেন৷ অন্য সময় সাতটার সময় বাস আসলেও আজ (শনিবার) পৌনে আটটাতেও বাসের দেখা নেই। কর্মীরা শুনেছেন রাস্তায় পুলিশ তাদের গাড়ি আটকে দিয়েছো